সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ঋষভ শেঠি পরিচালিত এবং অভিনীত ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ সিনেমাটি গোটা দেশে আলোড়ন তুলেছে। মুক্তির মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই ছবিটি আয় করেছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে শুধুমাত্র ভারতে আয় ৪৩৯ কোটি। বক্স অফিসে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে এই কন্নড় সিনেমাটি।
তবে এই চূড়ান্ত সাফল্যের পেছনে রয়েছে একটি অবিশ্বাস্য জীবনের গল্প। অনেকেই জানেন না, ঋষভ শেঠির আসল নাম ‘প্রশান্ত শেঠি’। ছোটবেলায় আর্থিক অনটনে বড় হওয়া এই তরুণ জীবিকার তাগিদে রাস্তায় পানির বোতল ও চা পাতা বিক্রি করতেন। তখন হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি, একদিন তিনি হবেন ভারতের অন্যতম সফল ও প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন।
একটি কাকতালীয় ঘটনার মধ্য দিয়েই সিনেমার জগতে প্রবেশ ঘটে ঋষভের। বেঙ্গালুরুর একটি ফিল্ম স্কুলে পানি সরবরাহ করতে গিয়ে ফিল্ম কোর্সের খোঁজ পান তিনি। তারপর আর দেরি না করে সেদিনই ভর্তি হয়ে যান সেই কোর্সে। সেই সিদ্ধান্তই বদলে দেয় তার জীবন।
২০১২ সালে ‘তুগলক’ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু হয় তার চলচ্চিত্রজীবন। ২০১৪ সালে ‘উলিদাভরু কান্দন্থ’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে নজরে আসেন। ২০১৬ সালে পরিচালনায় নাম লেখান ‘রিকি’ সিনেমার মাধ্যমে, যদিও ছবিটি প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। কিন্তু ২০১৭ সালে ‘কিরিক পার্টি’ দিয়ে বাজিমাত করেন। রক্ষিত শেঠি ও রাশমিকা মান্দানা অভিনীত এই ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় এবং ঋষভকে প্রতিষ্ঠিত করে এক প্রতিভাবান পরিচালক হিসেবে।
এরপর ‘বেল বটম (২০১৯)’ ও ‘গরুড় গমন বৃশভ বেহন (২০২১)’ ছবিতে তার অভিনয় মুগ্ধ করে দর্শককে। কিন্তু যেটি তাকে রাতারাতি জাতীয় পরিচিতি এনে দেয়, তা হলো ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কানতারা’। তিনি নিজেই ছবিটি পরিচালনা ও অভিনয় করেন, আর তার অভিনয় এবং চিত্রনাট্য দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়। এই ছবির জন্য তিনি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার’ স্বীকৃতি পান।
২০২৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ মূলত এই সিনেমার প্রিক্যুয়াল, যেখানে তিনি আবারও পরিচালনা ও মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে।
২০১৯ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষভ বলেছিলেন, জীবনের সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনাগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে নতুন সুযোগ। সেই ‘অদ্ভুত’ ঘটনাটিই আজ তাকে করে তুলেছে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
ডেস্ক রিপোর্ট 






















