আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে আরেক দফা দাবানল দেখা দিয়েছে এবং তীব্র বাতাসের তেজে আগুন খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে। সদ্যই লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়লো শহরটি। নতুন এই দাবানলের আগুন ইতোমধ্যে ৮ হাজার একর (৩২ বর্গকিলোমিটার) এলাকা গ্রাস করেছে।
প্রবল বাতাস ও শুকনো ঝোপঝাড়ের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে ১৯ হাজারের বেশি মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলস থেকে প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) উত্তরে হিউজ ফায়ার নামে পরিচিত এই আগুন ইতিমধ্যেই অঞ্চলটির দমকল বাহিনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। তারা ইতোমধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকায় জ্বলতে থাকা দুটি বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ক্যাস্টাইক লেকের কাছ পর্যন্ত দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া সান দিয়েগো ও ওশানসাইডের কাছেও দাবনল শুরু হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টির কাস্টেইক লেক এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে যে তারা “জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকির” সম্মুখীন।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বেশিরভাগ এলাকা এখনো শক্তিশালী, শুষ্ক বাতাসের কারণে চরম অগ্নি-ঝুঁকির জন্য রেড-ফ্ল্যাগ সতর্কতার মধ্যে রয়েছে।
রেড-ফ্ল্যাগ সতর্কতার ফলে, ক্যালিফোর্নিয়া বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগ (ক্যাল ফায়ার) জানিয়েছে, ১ হাজার ১০০ দমকল কর্মী দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস। দাবানলে প্রাণ গেছে অন্তত ২৮ জনের। পুড়ে গেছে ১২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরবর্তীতে বাতাসের গতি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেন বাসিন্দারা। এর মধ্যে নতুন করে ফের শুরু হলো দাবানল।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় গত ৯ মাস ধরে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি, যা বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তবে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত কিছু বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এই বৃষ্টি হলে দমকল কর্মীদের জন্য বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বস্তি বয়ে আনতে পারে।