‘সবুজে সাজাই বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে শেরপুর জেলা ‘প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব’-এর উদ্যোগে তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) নালিতাবাড়ী উপজেলার গড়কান্দা এলাকায় অবস্থিত অরণি প্রগ্রেসিভ স্কুল প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট প্রকৃতিপ্রেমী, সমাজসেবক ও শেরপুর ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা রাজিয়া সামাদ ডালিয়া।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব তারিক মিঠুল, জেলা ‘প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব’-এর উপদেষ্টা ও সদস্যবৃন্দ, সুধী সমাজ এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উদ্বোধনী দিনে অরণি প্রগ্রেসিভ স্কুল, শিমুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নাকুগাঁও স্থলবন্দরের বাইপাস সড়কের পাশে শতাধিক ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা রোপণ করা হয়। একইসাথে, দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল ও কাঠজাত গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে শেরপুর জেলায় প্রায় ৬ হাজার গাছের চারা রোপণের পাশাপাশি ১০ থেকে ১২ হাজার চারা বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য শুধু বৃক্ষরোপণ নয়; বরং রোপিত গাছগুলোর যথাযথ পরিচর্যা ও টেকসইভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা। এজন্য স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং সদর সড়কসংলগ্ন এলাকাগুলোকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে বৃক্ষরোপণের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে এক উদ্বুদ্ধকরণ সভার আয়োজন করা হয় যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে ‘গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই, নিজে বাঁচি—প্রাণপ্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় সচেতন হই’ শিরোনামে আলোচনা হয়। পরিবেশবিদরা এতে গাছ ও পাখির উপকারিতা নিয়ে বক্তব্য দেন।
এর আগে সকালে শেরপুর স্কেটিং ক্লাবের কিশোর-কিশোরী স্কেটারদের অংশগ্রহণে একটি সচেতনতামূলক স্কেটিং রাইড অনুষ্ঠিত হয়। তারা শেরপুর জেলা শহর থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। পথিমধ্যে বিভিন্ন বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব এবং বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেন।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রতি বছর ‘প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব’-এর এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন পরিবেশবাদীরা। বৃক্ষরোপণ অভিযানে অংশ নেওয়া পরিবেশ কর্মীরা মনে করেন, রোপিত গাছগুলো বড় হলে তা পরিবেশে নির্মল বাতাস ও অক্সিজেন সরবরাহে ভূমিকা রাখবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব হ্রাসে সহায়ক হবে।