শ্রীলংকায় হাতির পালে ট্রেনের ধাক্কায় ৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে দ্বীপদেশটির ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে, তবে যাত্রীদের কেউ হতাহত হয়নি। তারা আরো জানায়, বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ সংঘর্ষে বেঁচে যাওয়া দুটি হাতির চিকিৎসা করছে।
এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাবারানা এলাকায় অবস্থিত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। জায়গাটি রাজধানী কলম্বো থেকে ১৮০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভোরের ঠিক আগে এটি রেললাইনের ওপর দিয়ে পার হতে থাকা হাতি পরিবারটিকে ধাক্কা দেয়।
শ্রীলংকায় হাতি হত্যা বা হাতির ক্ষতি করা ফৌজদারি অপরাধ। দেশটিতে আনুমানিক ৭ হাজার বন্য হাতি রয়েছে। দেশটিতে হাতিকে জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলত, বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে হাতির ধর্মীয় গুরুত্বের কারণেই বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়।
এর আগেও একই অঞ্চলে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি ট্রেনের ধাক্কায় একটি গর্ভবতী হাতি ও দুটি শাবক মারা গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ ট্রেন চালকদের জন্য গতি সীমা নির্ধারণ করে দেয়, যাতে ট্রেন চলাচলের সময় হাতিদের আঘাতের মাত্রা কমানো সম্ভব হয়। তবুও এবার একই জায়গায় এতো হাতির মৃত্যু হলো!
শ্রীলংকায় মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্যপ্রাণীদের পুরনো আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে হাতিরা লোকালয়ে চলে আসছে। আর ক্ষুদ্র কৃষকরাও ফসল বাঁচাতে হাতিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছে।
শ্রীলংকার পরিবেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী অ্যান্টন জয়কোডি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে হাতি ও মানুষের সংঘর্ষে ১৫০ জন মানুষ ও ৪৫০টি নিহত হয়েছে। এর আগের বছরে ১৪৫ জন মানুষ ও ৪৩৩টি হাতি মারা গিয়েছিল। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, হাতি ও মানুষের সংঘর্ষ ক্রমেই বাড়ছে।
শুধু এই দুই বছরেই দ্বীপদেশটির মোট হাতির এক-দশমাংশ মারা গেছে।