পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সর্বক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। শুধু রঙ বা সার্টিফিকেশন দিয়ে ‘গ্রীন বিল্ডিং’ হবে না—পরিকল্পনা, নকশা, নির্মাণ, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ—সব ধাপে পরিবেশবান্ধব ধারণা ও প্রযুক্তির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
আজ রবিবার (২নভেম্বর) সকালে আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত ‘গ্রিন বিল্ডিং বিষয়ক কর্মশাল’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘টেকসই ও বাসযোগ্য নগর গড়তে সরকারি ভবনগুলো গ্রিন বিল্ডিং বা পরিবেশবান্ধব করে গড়া বাধ্যতামূলক করা জরুরি। সরকারি স্থাপনায় মানদণ্ড নিশ্চিত করতে পারলে বেসরকারি খাতও তা অনুসরণ করবে।’
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ঢাকার খাল ও নদী রক্ষা, বর্জ্য ও শব্দ-দূষণ কমানো, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ নগর পরিবেশের উন্নয়নে টেকসই ভবন অপরিহার্য। তিনি ছাদে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক আলো ও বায়ুপ্রবাহ ব্যবহারের মতো নীতিমালা স্থাপনায় যুক্ত করার আহ্বান জানান।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এইচবিআরআই), স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ‘গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব করেছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এই কাউন্সিল গ্রিন বিল্ডিংয়ের মানদণ্ড নির্ধারণ, আইন হালনাগাদ এবং বাস্তবায়ন তদারকিতে ভূমিকা রাখবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করছি, আমি নিজেও কথা বলব যেন তারা একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ করে এটার (গ্রিন বিল্ডিংয়ের) জন্য একটা নির্দেশনা তৈরি করে দেন। আমরা সকল সংগঠন মিলে একটা সম্মিলিত নির্দেশনা তৈরি করে ফেলি। তারপর আমরা জানুয়ারি থেকে নিয়ম করে দেই। তখন থেকে যে সরকারি বিল্ডিং হবে, তারা যেন এ নিয়মগুলো মেনে চলে।’
কর্মশালায় উপস্থিত বক্তরা জানান, গ্রিন বিল্ডিং এমন একটি কাঠামো যা নকশা, নির্মাণ, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের পুরো জীবনচক্র জুড়ে পরিবেশের উপর প্রভাব কমিয়ে এবং সম্পদ সাশ্রয়ী হয়ে পরিবেশবান্ধব উপায়ে তৈরি করা হয়। এতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানো ছাড়াও বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সাশ্রয় করবে বলে মত তাদের।
পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ নিয়ে আয়োজিত এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম; গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী; পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ জিয়াউল হক; পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম; বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত; এইচবিআরআই–এর প্রিন্সিপাল রিসার্চ অফিসার মোঃ নাফিজুর রহমান; স্থপতি রফিক আজমসহ প্রকৌশলী, স্থপতি, গবেষক ও নীতিনির্ধারকেরা।
নাসিমুল শুভ 


















