বাংলাদেশ প্লাস্টিক বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে। সকল বর্জ্য অব্যবস্থাপনাই দুঃখজনক। সেটা আমাদের উন্নত করতে হবে। সরকার সে লক্ষে কাজ করছে। একই সাথে সরকার একবার ব্যাবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে কাজ করছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে “প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবন ও সেরা চর্চার প্রসার” শীর্ষক কর্মশালায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, নদীতে প্লাস্টিক কিভাবে যাচ্ছে সেটা তো আমরা বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকেই দেখি। আমাদের এখন লবনে, চিনিতে, এমনকি মানুষের মস্তিষ্কে, মায়ের দুধে সব জায়গায়তেই মাইক্রোপ্লাস্টিক পাচ্ছি।
উপদেষ্টা বলেন, সরকার কি করলো! সরকার সফল হলো কি সরকার ব্যার্থ হলো সেটার চেয়ে জরুরি কিন্তু আপনার নিজের চিন্তা করা, আপনি কেমন করে ভালো ভালো থাকবেন, আপনার সন্তানকে কেমন করে ভালো রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, জুস খাওয়ায় সাধারণত ব্যবহার হওয়া স্ট্র-এর উৎপাদন বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই থেকে আমরা এর উৎপাদন বন্ধে কাজ করতে চাই। পলিথিনের বদলে পাটের ব্যাগ তৈরি করে সুলভমূল্যে গ্রাহককে দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। কারণ সুপার শপে গিয়ে অনেকে বেশি দাম দিয়ে একটি ব্যাগ কিনতে চান না।
সরকারি অনেক দফতরে এখন সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমে আসছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাও কিন্তু এক ধরণের সফলতা। সরকারি দফতরগুলোর বাইরেও অনেক জায়গায় এসব প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হয়ে আসছে। সুপার শপগুলোতে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।’
সাউথ এশিয়া কোঅপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের বাস্তবায়নে এবং বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রজেক্ট সার্ভিস অফিসের সহযোগিতায় বাংলাদেশে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায় ‘প্লাস্টিক ফ্রি রিভারস অ্যান্ড সিজ ফর সাউথ এশিয়া (PLEASE)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউট, আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও রেড অরেঞ্জ লিমিটেড।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ব বাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) গেইল মাটিন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইউ এন ও পি এস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন, বাংলাদেশ প্লিজ প্রকল্পের রূপান্তকারী ধারণা তুলে ধরেন রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তী। আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার এইচ. এ. এম. ফাইম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আই এম এস অধ্যাপক আলমগীর, ব্র্যাকের ম্যানেজার রুকসার সুলতানা, বিপিসিএলের সিইও ও এমডি খাদেম মাহমুদ ইউসুফ।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউ এন আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। সভাপতিত্ব করেন ‘প্লাস্টিক ফ্রি রিভারস অ্যান্ড সিজ ফর সাউথ এশিয়া (PLEASE)’ প্রকল্পের জাতীয় ফোকাল পয়েন্ট এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক (অস্থায়ী) ড. মো. আব্দুল মোতালেব।