বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগ

সাভারে চামড়া শিল্পনগরী সবুজে সাজাতে রোপিত হলো ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ

সাভারে চামড়া শিল্পনগরী সবুজে সাজাতে রোপিত হলো ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ

মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে এক পশলা বৃষ্টি, দিনটা স্নিগ্ধতায় শুরু হলেও সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিক চামড়া শিল্পনগরীতে পৌঁছাতেই নাকে আসলো চামড়া ও কেমিকেলের গন্ধ। অনভ্যস্ত নাকে আরও জোরালো ধাক্কা লাগলো চামড়া শিল্পনগরীর কমন ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (সিইটিপি) সামনে যেতেই। তবে আশার কথা যে পুরো চামড়া শিল্পনগরের রাস্তার দুইধারেই এখন সবুজের শোভা। সিইটিপির সামনে নানা বর্ণের ফুলের গাছ, নিমসহ নানা গাছের চারা। কিছু চারা বড় হয়ে ছায়াও দেয়া শুরু করেছে। রাসায়নিক ভরা বাতাসে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী এই গাছগুলোই আগামীর আশা, বিশুদ্ধতার ফিল্টার। চামড়া শিল্পনগরীকে আরও সবুজে সাজাতে আজ সিইটিপি প্রাঙ্গনে রোপণ করা হলো ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা।

সাভারে চামড়া শিল্পনগরী সবুজে সাজাতে রোপিত হলো ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ

বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে চামড়া শিল্প নগরীতে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে গাছের চারা রোপণ করেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ঢাকা ট্যানারি এস্টেট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ, ওশি (ওএসএইচই) ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো: আলম হোসেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরএমজি হেলথ ইন্সুরেন্স প্রজেক্টের বিজনেস ম্যানেজার এস এম ফেরদৌস কবীর, বিসিক কর্মকর্তা আরিফ ভূইয়া, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ, ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক কামাল হোসেনসহ চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পরিবেশকর্মীরা।

সিইটিপি প্রাঙ্গনে গাছের চারা রোপণের পর মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘চামড়া শিল্পনগরীতে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেয়াটা সময়োপযোগী ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। ট্যানারি মালিক, সিইটিপি কর্তৃপক্ষ সবাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বলেই আজ এখানে আমরা বৃক্ষরোপণ করলাম। চামড়া শিল্প এমন একটি শিল্প যেখানে দূষণের সংশ্লিষ্টতা বেশি। শুধু পানি নয়, বাতাসেও ভারী রাসায়নিকে উপস্থিতি। সুতরাং এখানে যদি আমরা অনেক বেশি বৃক্ষরোপণ করতে পারি তাহলে এই শিল্পনগরের পরিবেশে ভাল প্রভাব পড়বে, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন।’

প্রকৃতিবন্ধু আরও বলেন, ‘বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, বাতাসের বিশুদ্ধতা বজায় রাখাসহ বিশাল ভূমিকা পালন করে। আমরা সবাই যেন প্রকৃতির প্রাণ বৃক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসি। সবাই মিলে এই বর্ষায় যেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিগুলোকে জোরেশোরে এগিয়ে নিয়ে যাই। যেখানে পতিত জমি সেখানে যেন আমরা বৃক্ষরোপণ করি।’

তীব্র রাসায়নিকের মাঝে প্রাণের স্পন্দন যে গাছ তা বুঝে নিয়ে চামড়া শিল্পনগরীতে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধিতে মনোযোগী সিইটিপির  বর্তমান অভিভাবক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ। সিইটিপি প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে আগে গাছের সংখ্যা ছিল ৫ হাজারের মতো, গত দেড় বছরে আমরা গাছের সংখ্যা ৭ হাজার করতে পেরেছি। এখানে গাছের সংখ্যা যদি ১৫-২০ হাজার করা যায় তাহলে আশা করছি পরিবেশের ভারসাম্যটা বজায় রাখা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্যানারিতে বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। এতে করে কার্বন-ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের মতো গ্যাস উৎপন্ন হয়। বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা হলে বাতাসে অক্সিজেন ও ক্ষতিকর গ্যাসের উপাদানে ভারসাম্য রক্ষা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

বৃক্ষরোপণের পর কমন ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (সিইটিপি) সম্মেলন কক্ষে এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিটিএ সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘হাজারীবাগ থেকে সরে সাভারের হেমায়েতপুরে যখন চামড়া শিল্পনগরী গড়ে ওঠে তখন গাছের সংখ্যা একেবারেই কম ছিল। এরপর ধাপে ধাপে গাছের সংখ্যা বাড়ছে। আরও অনেক গাছ লাগানো প্রয়োজন।’

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসা আবারও প্রমাণ করলো। এই ভালোবাসার অংশীদার আজকে আমরা হতে পেরে সত্যিই আনন্দিত, উৎসাহিত হয়েছি।’

ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক কামাল হোসেন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গাছের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন এখানে যে গাছ আছে তা বিষাক্ত গ্যাসের তুলনায় কম। তাই আজকের এই উদ্যোগের মতো বেশি বেশি গাছ রোপণের কাজে শ্রমিকরা পাশে থাকবে।’

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ওশি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আলম হোসেন বলেন, বৃক্ষ নিধনের পরিণতি এখন দেশে স্পষ্ট। অসহনীয় তাপ, শ্বাসপ্রশ্বাসের নানা সমস্যা, শ্বাসকষ্টে ভোগান্তি বাড়ছে। আর ট্যানারি শিল্প এলাকায় নানা টক্সিক গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে। এখানে যদি গাছের পরিমাণ কম থাকে তাহলে বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। বাতাসের পরিশুদ্ধতার জন্য গাছের বিকল্প নেই। নিমসহ যেসব গাছ বাতাস পরিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে সেসব গাছ বেশি বেশি রোপণ করতে হবে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এস এম ফেরদৌস কবীর আলোচনা সভায়, একটি দেশের আয়তনের ২৫ শতাংশ গাছগাছালি থাকার বিষয়টির গুরুত্ব পুনরুল্লেখ করে বলেন, ‘ দেশের সবুজায়ন এখনো কাঙ্ক্ষিত এই হারের চেয়ে ১০ শতাংশ কম আছে। আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হয়তো খুবই ছোট উদ্যোগ, কিন্তু এরকম ছোট ছোট উদ্যোগই পারে বাংলাদেশকে সবুজে ভরিয়ে দিতে, ঘাটতি পূরণ করতে।’

সভায় বিলস-এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন বলেন, ‘চামড়া শিল্পনগরীতে যারা কাজ করছেন, আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা , তাদের সবার জন্য এখানে অক্সিজেন লেভেলের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণ আসলেই কার্যকর ও জরুরী।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে এবং হাতে হাত রেখে সবুজে বাংলাদেশ সাজানোর আহ্বান জানানোর পর সভা শেষ হয়।

চামড়া শিল্পনগরীতে আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছিলবিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ।’ 

এটি একটি প্রকল্প যা বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এই প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সলিডার সুইস, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, ওশি ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিলস এবং সবুজের অভিজান ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হল চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং পরিবেশের উপর শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগ

সাভারে চামড়া শিল্পনগরী সবুজে সাজাতে রোপিত হলো ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ

আপডেট সময় ০৮:৩৩:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে এক পশলা বৃষ্টি, দিনটা স্নিগ্ধতায় শুরু হলেও সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিক চামড়া শিল্পনগরীতে পৌঁছাতেই নাকে আসলো চামড়া ও কেমিকেলের গন্ধ। অনভ্যস্ত নাকে আরও জোরালো ধাক্কা লাগলো চামড়া শিল্পনগরীর কমন ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (সিইটিপি) সামনে যেতেই। তবে আশার কথা যে পুরো চামড়া শিল্পনগরের রাস্তার দুইধারেই এখন সবুজের শোভা। সিইটিপির সামনে নানা বর্ণের ফুলের গাছ, নিমসহ নানা গাছের চারা। কিছু চারা বড় হয়ে ছায়াও দেয়া শুরু করেছে। রাসায়নিক ভরা বাতাসে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী এই গাছগুলোই আগামীর আশা, বিশুদ্ধতার ফিল্টার। চামড়া শিল্পনগরীকে আরও সবুজে সাজাতে আজ সিইটিপি প্রাঙ্গনে রোপণ করা হলো ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা।

সাভারে চামড়া শিল্পনগরী সবুজে সাজাতে রোপিত হলো ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ

বিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে চামড়া শিল্প নগরীতে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে গাছের চারা রোপণ করেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ঢাকা ট্যানারি এস্টেট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ, ওশি (ওএসএইচই) ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো: আলম হোসেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরএমজি হেলথ ইন্সুরেন্স প্রজেক্টের বিজনেস ম্যানেজার এস এম ফেরদৌস কবীর, বিসিক কর্মকর্তা আরিফ ভূইয়া, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ, ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক কামাল হোসেনসহ চামড়াশিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পরিবেশকর্মীরা।

সিইটিপি প্রাঙ্গনে গাছের চারা রোপণের পর মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘চামড়া শিল্পনগরীতে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেয়াটা সময়োপযোগী ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। ট্যানারি মালিক, সিইটিপি কর্তৃপক্ষ সবাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বলেই আজ এখানে আমরা বৃক্ষরোপণ করলাম। চামড়া শিল্প এমন একটি শিল্প যেখানে দূষণের সংশ্লিষ্টতা বেশি। শুধু পানি নয়, বাতাসেও ভারী রাসায়নিকে উপস্থিতি। সুতরাং এখানে যদি আমরা অনেক বেশি বৃক্ষরোপণ করতে পারি তাহলে এই শিল্পনগরের পরিবেশে ভাল প্রভাব পড়বে, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা বুকভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন।’

প্রকৃতিবন্ধু আরও বলেন, ‘বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, বাতাসের বিশুদ্ধতা বজায় রাখাসহ বিশাল ভূমিকা পালন করে। আমরা সবাই যেন প্রকৃতির প্রাণ বৃক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসি। সবাই মিলে এই বর্ষায় যেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিগুলোকে জোরেশোরে এগিয়ে নিয়ে যাই। যেখানে পতিত জমি সেখানে যেন আমরা বৃক্ষরোপণ করি।’

তীব্র রাসায়নিকের মাঝে প্রাণের স্পন্দন যে গাছ তা বুঝে নিয়ে চামড়া শিল্পনগরীতে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধিতে মনোযোগী সিইটিপির  বর্তমান অভিভাবক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ। সিইটিপি প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে আগে গাছের সংখ্যা ছিল ৫ হাজারের মতো, গত দেড় বছরে আমরা গাছের সংখ্যা ৭ হাজার করতে পেরেছি। এখানে গাছের সংখ্যা যদি ১৫-২০ হাজার করা যায় তাহলে আশা করছি পরিবেশের ভারসাম্যটা বজায় রাখা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্যানারিতে বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। এতে করে কার্বন-ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের মতো গ্যাস উৎপন্ন হয়। বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা হলে বাতাসে অক্সিজেন ও ক্ষতিকর গ্যাসের উপাদানে ভারসাম্য রক্ষা হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

বৃক্ষরোপণের পর কমন ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (সিইটিপি) সম্মেলন কক্ষে এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিটিএ সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘হাজারীবাগ থেকে সরে সাভারের হেমায়েতপুরে যখন চামড়া শিল্পনগরী গড়ে ওঠে তখন গাছের সংখ্যা একেবারেই কম ছিল। এরপর ধাপে ধাপে গাছের সংখ্যা বাড়ছে। আরও অনেক গাছ লাগানো প্রয়োজন।’

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসা আবারও প্রমাণ করলো। এই ভালোবাসার অংশীদার আজকে আমরা হতে পেরে সত্যিই আনন্দিত, উৎসাহিত হয়েছি।’

ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক কামাল হোসেন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গাছের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন এখানে যে গাছ আছে তা বিষাক্ত গ্যাসের তুলনায় কম। তাই আজকের এই উদ্যোগের মতো বেশি বেশি গাছ রোপণের কাজে শ্রমিকরা পাশে থাকবে।’

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ওশি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. আলম হোসেন বলেন, বৃক্ষ নিধনের পরিণতি এখন দেশে স্পষ্ট। অসহনীয় তাপ, শ্বাসপ্রশ্বাসের নানা সমস্যা, শ্বাসকষ্টে ভোগান্তি বাড়ছে। আর ট্যানারি শিল্প এলাকায় নানা টক্সিক গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে। এখানে যদি গাছের পরিমাণ কম থাকে তাহলে বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। বাতাসের পরিশুদ্ধতার জন্য গাছের বিকল্প নেই। নিমসহ যেসব গাছ বাতাস পরিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে সেসব গাছ বেশি বেশি রোপণ করতে হবে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এস এম ফেরদৌস কবীর আলোচনা সভায়, একটি দেশের আয়তনের ২৫ শতাংশ গাছগাছালি থাকার বিষয়টির গুরুত্ব পুনরুল্লেখ করে বলেন, ‘ দেশের সবুজায়ন এখনো কাঙ্ক্ষিত এই হারের চেয়ে ১০ শতাংশ কম আছে। আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হয়তো খুবই ছোট উদ্যোগ, কিন্তু এরকম ছোট ছোট উদ্যোগই পারে বাংলাদেশকে সবুজে ভরিয়ে দিতে, ঘাটতি পূরণ করতে।’

সভায় বিলস-এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন বলেন, ‘চামড়া শিল্পনগরীতে যারা কাজ করছেন, আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা , তাদের সবার জন্য এখানে অক্সিজেন লেভেলের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণ আসলেই কার্যকর ও জরুরী।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে এবং হাতে হাত রেখে সবুজে বাংলাদেশ সাজানোর আহ্বান জানানোর পর সভা শেষ হয়।

চামড়া শিল্পনগরীতে আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছিলবিল্ডিং এ সাসটেইনেবল লেদার সেক্টর ইন বাংলাদেশ।’ 

এটি একটি প্রকল্প যা বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এই প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সলিডার সুইস, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, ওশি ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিলস এবং সবুজের অভিজান ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হল চামড়া শিল্পের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং পরিবেশের উপর শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো।