২০২৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন হাঙ্গেরির প্রখ্যাত লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১২২তম লেখক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
তাঁর অবদান উল্লেখ করতে গিয়ে নোবেল কমিটি বলছে, ‘লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মন্ত্রমুগ্ধকর ও দূরদর্শী সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি এই পুরস্কার পাচ্ছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যেও শিল্পের শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে।’
৭১ বছর বয়সী এই হাঙ্গেরীয় লেখক দীর্ঘকাল ধরে নোবেল পুরস্কারের জন্য সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায় ছিলেন। তাঁর রচনাশৈলী ফ্রাঞ্জ কাফকা এবং থমাস বার্নহার্ডের মতো মধ্য ইউরোপীয় কিংবদন্তি লেখকদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে। তাঁর উপন্যাসগুলোতে সাধারণত ‘অ্যাবসার্ডিটি’ (অমূলকতা) এবং ‘গ্রোটেস্ক’ (ভীতিকর–উদ্ভট) ধারা বেশি মাত্রায় থাকে। সমালোচকরা তাঁকে ‘অ্যাপোক্যালিপসের সমসাময়িক হাঙ্গেরীয় মাস্টার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

নোবেল কমিটি বলছে, ক্রাসনাহোরকাইয়ের সাহিত্য শুধু পশ্চিমে সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর লেখায় প্রাচ্য দর্শন এবং নান্দনিকতার গভীর প্রভাব দেখা যায়। তিনি প্রায়শই প্রাচ্যের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন, যেখানে তাঁর রচনা আরও ধ্যানমগ্ন এবং সুনিপুণভাবে আওয়াজ তোলে। তাঁর এই দ্বিমুখী দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে আধুনিক সাহিত্যের এক অসাধারণ বার্তাবাহকে পরিণত করেছে।
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে রোমানিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলাতে জন্মগ্রহণ করেন। এরকমই একটি প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চল হলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের প্রথম উপন্যাস সাতানটাঙ্গোর (১৯৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত) প্রেক্ষাপট। এই উপন্যাসটি হাঙ্গেরির সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই লেখকের অনবদ্য কাজ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এই উপন্যাস।
বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যার এবং বুধবার রসায়নের নোবেল ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১৩ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নোবেল পুরস্কার।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 




















