হারিকেন মেলিসার প্রভাবে জ্যামাইকায় অন্তত ৪ এবং পাশের দেশ হাইতিতে ২০ জনের মৃত্যৃ হয়েছে। এখনো ঝড়ের তাণ্ডব চলছে ক্যারিবীয় অঞ্চলে। জ্যামাইকার ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কয়েক ঘণ্টা পর কিউবায় আঘাত হানে হারিকেন মেলিসা। বুধবার ভোরের দিকে দ্বীপটিতে এই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে।
মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) তথ্যানুসারে, ঘণ্টায় ১২০ মাইল (১৯৫ কিলোমিটার) বেগে প্রবাহিত বাতাস নিয়ে কিউবার পূর্বাঞ্চলের উপকূলে পৌঁছায় ঘূর্ণিঝড়টি।

এদিকে ঝড়টি ক্রমেই দুর্বল হয়ে এখন বাহামা উপকূলের দিকে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ঝড়ের আঘাতে জ্যামাইকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সেন্ট এলিজাবেথ জেলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। অর্ধলক্ষাধিকের বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন।

ঘূর্ণিঝড়ের পর জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস সিএনএন-কে বলেন, “এ পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবাসিক ভবন, হাউজিং এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি সড়ক অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত সরকার কোনও মৃত্যুর নিশ্চিত খবর পায়নি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে কিছু প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
ঝড়ের দাপটে জ্যামাইকায় বহু গাছ উপড়ে গেছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে বহু রাস্তা। বাসিন্দারা বলছে, এমন ভয়ঙ্কর ঝড়ের দাপট তারা আগে দেখেননি।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মেলিসা ছিল ক্যারিবীয় অঞ্চলে এখন পর্যন্ত দেখা তৃতীয় শক্তিশালী হারিকেন। ২০০৫ সালের উইলমা ও ১৯৮৮ সালের গিলবার্টের পরই এর স্থান। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উষ্ণ সমুদ্রপৃষ্ঠের কারণে এখন ঘূর্ণিঝড় আরও দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ঝড় কিউবার সান্তিয়াগোতে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে, অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এই সান্তিয়াগো দে কিউবা প্রদেশের গুয়ামা এলাকাতেই প্রথম আঘাত হানে মেলিসা। প্রবল বাতাসে ১ লাখেরও বেশি পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রকাশিত কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকা।

সান্তিয়াগো থেকে গুয়ান্তানামো পর্যন্ত ব্যাপক এলাকা জলাবদ্ধ পড়েছে; সেখানকার মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশের বেশি মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে ভুগছে কিউবা। এমন সংকটের মধ্যেই এ ঘূর্ণিঝড় নতুন বিপর্যয় ডেকে আনার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
প্রকৃতিবার্তা ডেস্ক 



















