সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাকিস্তানের রাস্তায় নারী-শিশুর ওপর সিংহের আক্রমণ, কিন্তু কিভাবে? Logo মূল্যস্ফীতির হার কমে ৮.৪৮ শতাংশে, ২৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন Logo ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৯২ Logo বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চান ঋতুপর্ণা Logo যে কারণে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেন না সালমান খান Logo যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, নিখোঁজ ৪১ Logo ক্লাইমেট চেইঞ্জ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করতে ১০বছর মেয়াদি স্ট্রাটেজিক প্ল্যান প্রণয়ন করা হবে Logo সন্তান আছে প্রমাণ করতে পারলে ২০ হাজার ডলার পুরস্কার দেবেন তানজিন তিশা Logo এসএসসির ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা Logo সাগরে লঘুচাপ, তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস, ভূমিধসের আশঙ্কা
আজ আন্তর্জাতিক এভারেস্ট দিবস

হিমালয়ে প্রকৃতির সন্তান শেরপারাই যে কারণে আসল হিরো

হিমালয়ে প্রকৃতির সন্তান শেরপারাই যে কারণে আসল হিরো

বাংলাদেশসহ নানা দেশের অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী পর্বতারোহীরা প্রায়ই পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠছেন,  পত্র-পত্রিকায় বলা হচ্ছে ‘এভারেস্ট জয়’! যদিও আসলে প্রকৃতির এই বিশাল আশ্চর্য, সুউচ্চ হিমালয়কে ‘জয়’ করা শব্দ দিয়ে অসম্মান করা হয়। পর্বত জয় করার কথাটা বেশ অহমিকা এবং অহংকার ভরা মনে হয়। অথচ সুউচ্চ পর্বত এবং সুবিশাল সাগর প্রকৃতির হয়ে এক গভীর শিক্ষার বার্তা বহন করছে। আর সেটি হলো প্রকৃতির শক্তিশালী মহিমাগুলোর প্রতি বিনয়-শ্রদ্ধার মাধ্যমে প্রকৃত নম্রতা অর্জন। তাই তথাকথিত মাউন্ট এভারেস্ট ‘জয়ীরা’ যখন বেশ কষ্ট করে চূড়ায় উঠছে তার বিপরীতে তাদের চূড়ায় পৌঁছে দেয়া শেরপরা উঠে যাচ্ছে অনেকটাই কম কষ্টে। হিমালয়ের প্রকৃতির সন্তান এই শেরপারাই আসলে পর্দার পেছনের হিরো যারা একেকজন মাউন্ট এভারেস্টে উঠছেন নিয়মিত।

আসলে বলতে গেলে আধুনিক মানুষকে প্রকৃতির বৈরীতা কাটিয়ে সাহসী-উদ্যমী এবং আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করে চলেছেন এই শেরপারা। যার শুরুটা হয়েছিল শেরপা তেনজিং নোরগের মাধ্যমে। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে তেনজিং নোরগের আন্তরিক সহায়তায় বিশ্বে দুর্গম পথ পাড়ি দেয়ার এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন স্যার এডমন্ড হিলারি।

এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে

১৯৮৬ সালে তেনজিং নোরগে ও ২০০৮ সালে স্যার এডমন্ড হিলারি মারা যাওয়ার পর তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নেপাল সরকার এই দিনটিকে এভারেস্ট ডে হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৮ সালে সর্বপ্রথম এভারেস্ট দিবস পালন করা হয়। এখন বিশ্বজুড়ে দিনটিকে ইন্টারন্যাশনাল এভারেস্ট ডে হিসেবে পালন করা হয়, বিশেষ করে পর্বতারোহীদের চেনাজানা বলয়ে।

এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে সফল প্রথম জুটির নাম ইতিহাসে লেখা হয়েছে হিলারি-তেনজিং নামে। কিন্তু অনেকেই ভুলে যান, সেই অভিযানে পথপ্রদর্শক ছিলেন তেনজিং । শেরপা হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা, সাহস ও নেতৃত্ব ছাড়া সেই বিজয় সম্ভব হতো না। তেনজিং শুধু একজন সহযাত্রী ছিলেন না, তিনিই ছিলেন হিলারির পথের আলোকবর্তিকা।

শেরপারা শুধু গাইড নন, তাঁরা একটি জাতিগোষ্ঠী। পূর্ব নেপালের খুম্বু অঞ্চলে বসবাসকারী এই তিব্বতীয় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর জীবনই গড়ে উঠেছে হিমালয়ের কোলে। যেখানে উচ্চতা, অক্সিজেনের ঘাটতি কিংবা প্রচণ্ড ঠান্ডা অন্যদের জন্য ভয়ানক, সেখানে শেরপাদের কাছে এসবই দৈনন্দিন বাস্তবতা।

শেরপাদের দেহ গঠনে রয়েছে ব্যতিক্রমী অভিযোজন ক্ষমতা। কম অক্সিজেনেও তারা দক্ষভাবে কাজ করতে পারেন, তাঁদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের গঠনও আলাদা। এ কারণেই পর্বতারোহণের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক যেন শরীর ও মাটির আত্মীয়তা।

শেরপাদের দায়িত্ব সীমিত নয়। তারা খাবার ও গ্যাস ট্যাঙ্ক বহন করেন, ক্যারাভান পরিচালনা করেন, পর্বতের দুর্গম পথ নিরাপদ করতে দড়ি পুঁতেন এবং বিপদের সময় ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধারকাজে। এসবই করেন ন্যূনতম পারিশ্রমিকে, যেখানে অভিযাত্রীরা একটি অভিযানে ব্যয় করেন লাখ লাখ ডলার।

শেরপাদের জীবনে ঝুঁকি যেন নিত্যসঙ্গী। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ১৩ জন পর্বতারোহীর বিপরীতে একজন শেরপার মৃত্যু ঘটে। ২০১৪ সালের বরফধস ও ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে প্রাণ হারান শতাধিক শেরপা। এভারেস্টে মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছেন তাঁরাই। অথচ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা ইতিহাসে তাঁদের কথা উঠে আসে খুব কমই। এসবে অবশ্য কিছুই যায় আসে না শেরপাদের, সব পরিস্থিতিতে হাসি লেগে থাকে তাদের মুখে।

১৫ শতকে যাযাবর শেরপারা পূর্ব তিব্বত থেকে নেপালে চলে এসেছিলেন। বিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমা অনুপ্রবেশের আগে, শেরপারা পাহাড়ে আরোহণ করতেন না। নিংমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হিসেবে, তারা শ্রদ্ধার সাথে হিমালয়ের উঁচু শৃঙ্গগুলি অতিক্রম করতেন, বিশ্বাস করতেন যে এগুলি দেবতাদের আবাসস্থল। শেরপারা উচ্চ-উচ্চতায় কৃষিকাজ, গবাদি পশু পালন এবং পশম সুতা এবং বুনন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন।

১৯২০ সালের দিকে শেরপা পর্বতারোহণের সাথে যুক্ত হন। ব্রিটিশরা, যারা তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ন্ত্রণ করত, পর্বত আরোহণ অভিযানের পরিকল্পনা করত এবং শেরপাদের পোর্টার হিসেবে নিয়োগ করত। সেই সময় থেকে, তাদের কাজ করার আগ্রহ এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণের ক্ষমতার কারণে, পর্বতারোহণ শেরপা সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে।

এভারেস্টের কোলে প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন কামি রিতা শেরপা

বংশপরম্পরায় এই পেশায় যুক্ত হলেও আজকের শেরপারা অনেকেই শিক্ষিত, ইংরেজি ভাষায় দক্ষ এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কেউ কেউ নিজেরাই হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি পর্বতারোহী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কামি রিতা শেরপা, যিনি এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন ৩০ বার চূড়ায় পৌঁছে।

‘শেরপা’ শব্দটি বহু সময় কেবল ‘কুলি’ বা ‘গাইড’ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই সামাজিক অবমূল্যায়ন ও শ্রেণিবিভেদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে সচেতনতা গড়ে উঠছে। এভারেস্ট দিবসে যখন আমরা বিজয় উদযাপন করি, তখন মনে রাখতে হবে, সেই বিজয়ের নেপথ্য কৃতিত্ব তাঁদের, যাঁরা নীরবে পাহাড়ের বুক চিরে গড়ে দেন সাফল্যের পথ।

হিমালয়ের প্রকৃত উচ্চতা কেবল মাপা যায় না মিটারে—তা বুঝতে হয় শেরপাদের সাহস, শ্রম ও আত্মত্যাগের পরিমাপে।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের রাস্তায় নারী-শিশুর ওপর সিংহের আক্রমণ, কিন্তু কিভাবে?

আজ আন্তর্জাতিক এভারেস্ট দিবস

হিমালয়ে প্রকৃতির সন্তান শেরপারাই যে কারণে আসল হিরো

আপডেট সময় ০৬:৩২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

বাংলাদেশসহ নানা দেশের অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী পর্বতারোহীরা প্রায়ই পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠছেন,  পত্র-পত্রিকায় বলা হচ্ছে ‘এভারেস্ট জয়’! যদিও আসলে প্রকৃতির এই বিশাল আশ্চর্য, সুউচ্চ হিমালয়কে ‘জয়’ করা শব্দ দিয়ে অসম্মান করা হয়। পর্বত জয় করার কথাটা বেশ অহমিকা এবং অহংকার ভরা মনে হয়। অথচ সুউচ্চ পর্বত এবং সুবিশাল সাগর প্রকৃতির হয়ে এক গভীর শিক্ষার বার্তা বহন করছে। আর সেটি হলো প্রকৃতির শক্তিশালী মহিমাগুলোর প্রতি বিনয়-শ্রদ্ধার মাধ্যমে প্রকৃত নম্রতা অর্জন। তাই তথাকথিত মাউন্ট এভারেস্ট ‘জয়ীরা’ যখন বেশ কষ্ট করে চূড়ায় উঠছে তার বিপরীতে তাদের চূড়ায় পৌঁছে দেয়া শেরপরা উঠে যাচ্ছে অনেকটাই কম কষ্টে। হিমালয়ের প্রকৃতির সন্তান এই শেরপারাই আসলে পর্দার পেছনের হিরো যারা একেকজন মাউন্ট এভারেস্টে উঠছেন নিয়মিত।

আসলে বলতে গেলে আধুনিক মানুষকে প্রকৃতির বৈরীতা কাটিয়ে সাহসী-উদ্যমী এবং আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করে চলেছেন এই শেরপারা। যার শুরুটা হয়েছিল শেরপা তেনজিং নোরগের মাধ্যমে। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে তেনজিং নোরগের আন্তরিক সহায়তায় বিশ্বে দুর্গম পথ পাড়ি দেয়ার এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন স্যার এডমন্ড হিলারি।

এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে

১৯৮৬ সালে তেনজিং নোরগে ও ২০০৮ সালে স্যার এডমন্ড হিলারি মারা যাওয়ার পর তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নেপাল সরকার এই দিনটিকে এভারেস্ট ডে হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৮ সালে সর্বপ্রথম এভারেস্ট দিবস পালন করা হয়। এখন বিশ্বজুড়ে দিনটিকে ইন্টারন্যাশনাল এভারেস্ট ডে হিসেবে পালন করা হয়, বিশেষ করে পর্বতারোহীদের চেনাজানা বলয়ে।

এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে সফল প্রথম জুটির নাম ইতিহাসে লেখা হয়েছে হিলারি-তেনজিং নামে। কিন্তু অনেকেই ভুলে যান, সেই অভিযানে পথপ্রদর্শক ছিলেন তেনজিং । শেরপা হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা, সাহস ও নেতৃত্ব ছাড়া সেই বিজয় সম্ভব হতো না। তেনজিং শুধু একজন সহযাত্রী ছিলেন না, তিনিই ছিলেন হিলারির পথের আলোকবর্তিকা।

শেরপারা শুধু গাইড নন, তাঁরা একটি জাতিগোষ্ঠী। পূর্ব নেপালের খুম্বু অঞ্চলে বসবাসকারী এই তিব্বতীয় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর জীবনই গড়ে উঠেছে হিমালয়ের কোলে। যেখানে উচ্চতা, অক্সিজেনের ঘাটতি কিংবা প্রচণ্ড ঠান্ডা অন্যদের জন্য ভয়ানক, সেখানে শেরপাদের কাছে এসবই দৈনন্দিন বাস্তবতা।

শেরপাদের দেহ গঠনে রয়েছে ব্যতিক্রমী অভিযোজন ক্ষমতা। কম অক্সিজেনেও তারা দক্ষভাবে কাজ করতে পারেন, তাঁদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের গঠনও আলাদা। এ কারণেই পর্বতারোহণের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক যেন শরীর ও মাটির আত্মীয়তা।

শেরপাদের দায়িত্ব সীমিত নয়। তারা খাবার ও গ্যাস ট্যাঙ্ক বহন করেন, ক্যারাভান পরিচালনা করেন, পর্বতের দুর্গম পথ নিরাপদ করতে দড়ি পুঁতেন এবং বিপদের সময় ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধারকাজে। এসবই করেন ন্যূনতম পারিশ্রমিকে, যেখানে অভিযাত্রীরা একটি অভিযানে ব্যয় করেন লাখ লাখ ডলার।

শেরপাদের জীবনে ঝুঁকি যেন নিত্যসঙ্গী। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি ১৩ জন পর্বতারোহীর বিপরীতে একজন শেরপার মৃত্যু ঘটে। ২০১৪ সালের বরফধস ও ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে প্রাণ হারান শতাধিক শেরপা। এভারেস্টে মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছেন তাঁরাই। অথচ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা ইতিহাসে তাঁদের কথা উঠে আসে খুব কমই। এসবে অবশ্য কিছুই যায় আসে না শেরপাদের, সব পরিস্থিতিতে হাসি লেগে থাকে তাদের মুখে।

১৫ শতকে যাযাবর শেরপারা পূর্ব তিব্বত থেকে নেপালে চলে এসেছিলেন। বিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমা অনুপ্রবেশের আগে, শেরপারা পাহাড়ে আরোহণ করতেন না। নিংমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হিসেবে, তারা শ্রদ্ধার সাথে হিমালয়ের উঁচু শৃঙ্গগুলি অতিক্রম করতেন, বিশ্বাস করতেন যে এগুলি দেবতাদের আবাসস্থল। শেরপারা উচ্চ-উচ্চতায় কৃষিকাজ, গবাদি পশু পালন এবং পশম সুতা এবং বুনন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন।

১৯২০ সালের দিকে শেরপা পর্বতারোহণের সাথে যুক্ত হন। ব্রিটিশরা, যারা তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ন্ত্রণ করত, পর্বত আরোহণ অভিযানের পরিকল্পনা করত এবং শেরপাদের পোর্টার হিসেবে নিয়োগ করত। সেই সময় থেকে, তাদের কাজ করার আগ্রহ এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণের ক্ষমতার কারণে, পর্বতারোহণ শেরপা সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে।

এভারেস্টের কোলে প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন কামি রিতা শেরপা

বংশপরম্পরায় এই পেশায় যুক্ত হলেও আজকের শেরপারা অনেকেই শিক্ষিত, ইংরেজি ভাষায় দক্ষ এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কেউ কেউ নিজেরাই হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি পর্বতারোহী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কামি রিতা শেরপা, যিনি এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন ৩০ বার চূড়ায় পৌঁছে।

‘শেরপা’ শব্দটি বহু সময় কেবল ‘কুলি’ বা ‘গাইড’ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই সামাজিক অবমূল্যায়ন ও শ্রেণিবিভেদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে সচেতনতা গড়ে উঠছে। এভারেস্ট দিবসে যখন আমরা বিজয় উদযাপন করি, তখন মনে রাখতে হবে, সেই বিজয়ের নেপথ্য কৃতিত্ব তাঁদের, যাঁরা নীরবে পাহাড়ের বুক চিরে গড়ে দেন সাফল্যের পথ।

হিমালয়ের প্রকৃত উচ্চতা কেবল মাপা যায় না মিটারে—তা বুঝতে হয় শেরপাদের সাহস, শ্রম ও আত্মত্যাগের পরিমাপে।