এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ভারত। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে রেকর্ড নবমবারের মতো মহাদেশীয় আসরের শিরোপা ঘরে তুলল সূর্যকুমার যাদবের দল। ৫৩ বলে অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালের নায়ক তিলক ভার্মা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মহাদেশীয় আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯.১ ওভারে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মাকে (৫) দলীয় ৭ রানে ফেরান ফাহিম আশরাফ। স্লো ডেলিভারিতে মেরে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন হারিস রউফের হাতে। পরের ওভারে শাহিন আফ্রিদির স্লো বলে তুলে মারার চেষ্টায় ঠিকঠাক লাগেনি সূর্যকুমার যাদবের (১) ব্যাটে। মিড অফে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন সালমান আগা।
সূর্য ব্যাট হাতে ধুঁকছিলেন চলতি বছর, সেই অফফর্ম এবারের এশিয়া কাপেও চালু রেখেছেন। ফাইনালসহ এই বছর ১১ ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়কের রান মাত্র ১০০। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম ভারতীয় শিবিরে আবারও ধাক্কা দেন শুভমান গিলকে (১২) ফিরিয়ে। মিড অনে তার ক্যাটিও নেন রউফ। ৪ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত বিপদে পড়ে। পাওয়ার প্লের ষষ্ঠ ওভারে ফাহিমকে চার-ছক্কায় ১১ রান নিয়ে সেই পরিস্থিতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠেন তিলক ভার্মা।
আবরার আহমেদের করা নবম ওভারে ডিপ মিডে ক্যাচ তুলেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু ব্যক্তিগত ১২ রানে থাকা এই ব্যাটারের একেবারে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বসেন হুসাইন তালাত। সেটাই বিপদের তিরটা পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এরপর তিলক-স্যামসন মিলে গড়েম বোঝাপড়ার জুটি। রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেছেন, সুযোগমতো হাঁকিয়েছেন বাউন্ডারি। ৫৭ রানে সেই জুটি ভেঙেছেন আবরার, ব্যক্তিগত ২৪ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন স্যামসন।
ভারতের ওপর প্রয়োজনীয় রানরেটের চাপ বাড়ছিল। রউফের করা ১৫তম ওভারে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে তা থেকে কিছুটা মুক্তি দিয়েছেন তিলক। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটিও পেয়ে যান এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের ওভারে আবরার ১১ রান দিলে ৪ ওভারে ভারতের আর ৩৬ রান প্রয়োজন হয়। শেষদিকে রোমাঞ্চ ছড়ায় দুবের আউটে। তবে তিলকের সঙ্গে তার ৬০ রানের জুটি ভারতের কাজটা সহজ করে ফেলেছিল। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ১০ রানের। চার-ছক্কায় তিলক ২ বল হাতে রেখেই ভারতের জয় নিশ্চিত করলেন।
এর আগে, টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৮৪ রান করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার শাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামানে। ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে ফিফটি পাওয়া ফারহান ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৭ রান করে বরুণ চক্রবর্তী। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন সাইম আইয়ুব। কুলদীপ যাদবের বলে বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ বলে ১৪ রান।
দলীয় ১১৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পরই যেন ধস নামে পাকিস্তানের ইনিংসে। মোহাম্মদ হারিস-সালমান আলি আগারা দাঁড়াতেই পারেননি। বাকিদের আসা যাওয়ার মাঝেও ফখর জামান এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে ৩৫ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। শেষ ২০ রান যোগ করতে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা।
বোলিংয়ে ভারতের হয়ে একাই ৪ উইকেট শিকার করেছেন কুলদীপ। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন বুমরাহ, বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেল।