সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন    Logo ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে লুলার প্রত্যয়, “কপ ৩০ হবে সত্যের কপ” Logo এবার নিজেকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আরিফিন শুভ Logo ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার Logo ভারত-পাকিস্তানে একরাতের ব্যবধানে বোমা হামলা: দিল্লিতে নিহত ৯, ইসলামাবাদে নিহত ১২ Logo রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে Logo সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল সাড়ে তিন মাস Logo দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিবে না সৌদি সরকার Logo নদী গিলে নিচ্ছে জমি: ভাঙনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তহীন লড়াই Logo ময়মনসিংহে বাসে আগুন, দগ্ধ হয়ে চালকের মৃত্যু

গাছের পাতায় ত্বকের সুরক্ষা

  • শারমিন সীমা
  • আপডেট সময় ০৮:০৫:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪
  • 472

গাছের পাতায় ত্বকের সুরক্ষা

সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার চল প্রবল। আর এই প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে গাছের পাতা অন্যতম। ত্বকে ব্যবহারের জন্য বাজারে যেসব ক্রিম বা লোশন পাওয়া যায়, তার অনেকগুলোই বিভিন্ন গাছগাছালির সঙ্গে রাসায়নিক উপাদান যোগ করে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। রাসায়নিক মিশ্রিত ত্বকের উপাদান ব্যবহারের চেয়ে সরাসরি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাটাই স্বাস্থ্যসম্মত। বিভিন্ন গাছের পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

আসুন জেনে নিই কোন কোন গাছের পাতা ত্বকের যত্নে কার্যকরী:

তুলসী পাতা: তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। তুলসী পাতা, কীটপতঙ্গের হুল এবং পোকার কামড় থেকে আরাম দেয়। এটি ত্বকের সংক্রমণ দূর করে, মুখের ব্রণ  কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে মসৃণ করে। এক গ্লাস তুলসীর রস পান করলে এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল বৈশিষ্ট্য রক্ত পরিশোধন করে ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়।

নিমপাতা:  নিম পাতার অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য এলার্জি দূরে রাখে। ত্বকে নিমপাতা ঘষে নয়তো বেটে ব্রণ বা পিম্পলে প্রয়োগ করলে স্বস্তি পাওয়া যায়। ব্রণের জন্য প্রচুর ভেষজ ক্রিম এই নিমপাতা দিয়ে তৈরি হয়। ত্বক ছাড়াও, নিমপাতা যথেষ্ট শক্তিশালী শারীরিক কার্যাবলী সচল রাখতে ও বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে।

অ্যালোভেরা পাতা: অ্যালোভেরা পাতার জেল ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বককে হাইড্রেট করে, জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। অ্যালোভেরাতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ত্বক থেকে বয়সের ছাপ ও ট্যান দূর করে। অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টি  ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে।

কলাপাতা: কলাপাতা ত্বকে ওষুধ হিসেবে কাজ করে।  বিষাক্ত মৌমাছির হুল, পোকামাকড়ের  কামড়, ফুসকুড়ি, মাকড়সার কামড়, সাধারণ ত্বকের জ্বালা উপশম করে। কলাপাতার রস বরফের ট্রে-তে রেখে ঠান্ডা করে সেই কিউব সারা মুখে ঘষে নিলে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়।  কলাপাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে যার ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল ও সতেজ।

নারকেল পাতা: নারকেল পাতার রস ত্বকের জন্য একটি দুর্দান্ত টোনার। এটি ত্বকের ছিদ্র কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে টানটান রাখে।

সজনে পাতা: এই গাছের প্রতিটি অংশ ফল, বীজ, ফুল, পাতা, বাকল এবং শিকড়ে নিজস্ব ঔষধি বৈশিষ্ট্য আছে। সজনে পাতা ভিটামিন এ, বি, সি, ডি এবং ই সমৃদ্ধ। সজনে পাতার ব্যবহারে ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি হয়, যা পোরের সমস্যা সমাধানে কাজ করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শুষ্কভাব দূর করে, বয়সের ছাপ এবং পিগমেন্টেশন দূর করতে সাহায্য করে। ব্রণ বা পিম্পল প্রতিরোধ করতে দারুণভাবে সহায়ক, এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। সজনে পাতার স্কিন-পরিশোধন এবং থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য ত্বকে উপস্থিত সব মলিনতা অপসারণ করে।

মেহেদি পাতা: মেহেদি পাতা ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক রঞ্জক এবং কন্ডিশনার। এটি ত্বককে নরম করে, চুলকানি দূর করে এবং ত্বকের টোন সমান করে। অনেকেরই বারোমাস পা ফাটার সমস্যা থাকে, এটি পা-ফাটা রোধ করে, মুখের বলিরেখা দূর করে। পুরোনো ক্ষত, যেগুলো বারবার ফিরে আসে, এসব ক্ষত সারিয়ে তুলতে মেহেদি পাতার তুলনা নেই। মেহেদি পাতা ব্যবহার করলে ৯০ ভাগ চুল পড়া কমে যাবে এবং চুল পাকা রোধ করবে।

পুদিনা পাতা : পিপারমিন্ট পাতা পুদিনা পরিবারের অন্যতম সদস্য। এই পাতা পাতার পুষ্টি ত্বককে সবল রাখতে, ফোলা কমাতে ও ত্বকের ছিদ্র যতটা সম্ভব কমাতে সাহায্য করে। এটি বার্ধক্যের ফলে হারিয়ে যাওয়া স্থিতিস্থাপকতা পুনরুদ্ধার করে ও অকালবার্ধক্য রোধ করে। পিপারমিন্ট পাতার মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ ত্বকের প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করে।

গাছের পাতা ব্যবহারের উপায়

পেস্ট তৈরি: গাছের পাতা গুঁড়ো করে বা পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন।

ফেস প্যাক: অন্যান্য উপাদানের সাথে মিশিয়ে গাছের পাতা দিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন।

টোনার: গাছের পাতার রস দিয়ে ত্বক টোন করতে পারেন।

স্ক্রাব: গাছের পাতা এবং অন্যান্য স্ক্রাব উপাদান মিশিয়ে ত্বক ঘষতে পারেন।

 

সতর্কতা

যেকোনো গাছের পাতা ব্যবহার করার আগে একটু পরিমাণে ত্বকের ছোট্ট অংশে পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি কোনো অ্যালার্জি হয় তাহলে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

গর্ভবতী বা দুধ খাওয়ানো মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা উচিত নয়।

মনে রাখতে হবে যেকোন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

আপলোডকারীর তথ্য

Shuvo

জনপ্রিয় সংবাদ

আশা জাগিয়ে শুরু কপ ৩০, মুকিত মজুমদার বাবুর প্রত্যাশা পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তবায়ন   

গাছের পাতায় ত্বকের সুরক্ষা

আপডেট সময় ০৮:০৫:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার চল প্রবল। আর এই প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে গাছের পাতা অন্যতম। ত্বকে ব্যবহারের জন্য বাজারে যেসব ক্রিম বা লোশন পাওয়া যায়, তার অনেকগুলোই বিভিন্ন গাছগাছালির সঙ্গে রাসায়নিক উপাদান যোগ করে প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। রাসায়নিক মিশ্রিত ত্বকের উপাদান ব্যবহারের চেয়ে সরাসরি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাটাই স্বাস্থ্যসম্মত। বিভিন্ন গাছের পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

আসুন জেনে নিই কোন কোন গাছের পাতা ত্বকের যত্নে কার্যকরী:

তুলসী পাতা: তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। তুলসী পাতা, কীটপতঙ্গের হুল এবং পোকার কামড় থেকে আরাম দেয়। এটি ত্বকের সংক্রমণ দূর করে, মুখের ব্রণ  কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে মসৃণ করে। এক গ্লাস তুলসীর রস পান করলে এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল বৈশিষ্ট্য রক্ত পরিশোধন করে ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়।

নিমপাতা:  নিম পাতার অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য এলার্জি দূরে রাখে। ত্বকে নিমপাতা ঘষে নয়তো বেটে ব্রণ বা পিম্পলে প্রয়োগ করলে স্বস্তি পাওয়া যায়। ব্রণের জন্য প্রচুর ভেষজ ক্রিম এই নিমপাতা দিয়ে তৈরি হয়। ত্বক ছাড়াও, নিমপাতা যথেষ্ট শক্তিশালী শারীরিক কার্যাবলী সচল রাখতে ও বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে।

অ্যালোভেরা পাতা: অ্যালোভেরা পাতার জেল ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বককে হাইড্রেট করে, জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। অ্যালোভেরাতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ত্বক থেকে বয়সের ছাপ ও ট্যান দূর করে। অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টি  ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে।

কলাপাতা: কলাপাতা ত্বকে ওষুধ হিসেবে কাজ করে।  বিষাক্ত মৌমাছির হুল, পোকামাকড়ের  কামড়, ফুসকুড়ি, মাকড়সার কামড়, সাধারণ ত্বকের জ্বালা উপশম করে। কলাপাতার রস বরফের ট্রে-তে রেখে ঠান্ডা করে সেই কিউব সারা মুখে ঘষে নিলে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়।  কলাপাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে যার ফলে ত্বক হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল ও সতেজ।

নারকেল পাতা: নারকেল পাতার রস ত্বকের জন্য একটি দুর্দান্ত টোনার। এটি ত্বকের ছিদ্র কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে টানটান রাখে।

সজনে পাতা: এই গাছের প্রতিটি অংশ ফল, বীজ, ফুল, পাতা, বাকল এবং শিকড়ে নিজস্ব ঔষধি বৈশিষ্ট্য আছে। সজনে পাতা ভিটামিন এ, বি, সি, ডি এবং ই সমৃদ্ধ। সজনে পাতার ব্যবহারে ত্বকের প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি হয়, যা পোরের সমস্যা সমাধানে কাজ করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শুষ্কভাব দূর করে, বয়সের ছাপ এবং পিগমেন্টেশন দূর করতে সাহায্য করে। ব্রণ বা পিম্পল প্রতিরোধ করতে দারুণভাবে সহায়ক, এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। সজনে পাতার স্কিন-পরিশোধন এবং থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য ত্বকে উপস্থিত সব মলিনতা অপসারণ করে।

মেহেদি পাতা: মেহেদি পাতা ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক রঞ্জক এবং কন্ডিশনার। এটি ত্বককে নরম করে, চুলকানি দূর করে এবং ত্বকের টোন সমান করে। অনেকেরই বারোমাস পা ফাটার সমস্যা থাকে, এটি পা-ফাটা রোধ করে, মুখের বলিরেখা দূর করে। পুরোনো ক্ষত, যেগুলো বারবার ফিরে আসে, এসব ক্ষত সারিয়ে তুলতে মেহেদি পাতার তুলনা নেই। মেহেদি পাতা ব্যবহার করলে ৯০ ভাগ চুল পড়া কমে যাবে এবং চুল পাকা রোধ করবে।

পুদিনা পাতা : পিপারমিন্ট পাতা পুদিনা পরিবারের অন্যতম সদস্য। এই পাতা পাতার পুষ্টি ত্বককে সবল রাখতে, ফোলা কমাতে ও ত্বকের ছিদ্র যতটা সম্ভব কমাতে সাহায্য করে। এটি বার্ধক্যের ফলে হারিয়ে যাওয়া স্থিতিস্থাপকতা পুনরুদ্ধার করে ও অকালবার্ধক্য রোধ করে। পিপারমিন্ট পাতার মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’ ত্বকের প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করে।

গাছের পাতা ব্যবহারের উপায়

পেস্ট তৈরি: গাছের পাতা গুঁড়ো করে বা পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন।

ফেস প্যাক: অন্যান্য উপাদানের সাথে মিশিয়ে গাছের পাতা দিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন।

টোনার: গাছের পাতার রস দিয়ে ত্বক টোন করতে পারেন।

স্ক্রাব: গাছের পাতা এবং অন্যান্য স্ক্রাব উপাদান মিশিয়ে ত্বক ঘষতে পারেন।

 

সতর্কতা

যেকোনো গাছের পাতা ব্যবহার করার আগে একটু পরিমাণে ত্বকের ছোট্ট অংশে পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি কোনো অ্যালার্জি হয় তাহলে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

গর্ভবতী বা দুধ খাওয়ানো মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা উচিত নয়।

মনে রাখতে হবে যেকোন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।