সাপের মতো ফণা তুলে ফুটে আছে গোলাপি নাগলিঙ্গম ফুল। সুগন্ধ আর সৌন্দর্যে চোখ সরানো দায়। এই নাগলিঙ্গম ফুল ফুটেছে গাজীপুরের রাজবাড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে। প্রতি বছর মার্চ মাসে থেকে জুন পর্যন্ত ফুটে থাকে নাগলিঙ্গম ফুল।
শত বছরের প্রাচীন গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে ভাওয়াল রাজাদের মহিমা ধরে রেখেছে। বিরল প্রজাতির এই নাগলিঙ্গম গাছ। ফুলের রং, আভিজাত্য, মঞ্জুরি, গঠনশৈলী—সব কিছু মিলিয়ে একে অনন্য করে তুলেছে। পাপড়ির মধ্যে নাগ বা সাপের মতো ফণা। সম্ভবত এ কারণে এর নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম। গাছের গুড়ি ফুড়ে বের হওয়া দড়ির মতো একধরনের দণ্ডের মঞ্জুরিতে ফুল ফোটে। ফুলের আকার বেশ বড়। ফুলের পাপড়িতে লাল, গোলাপি ও হলুদের মিশ্রণ নাগলিঙ্গমকে করেছে আকর্ষণীয়।
বিশালকৃতির নাগলিঙ্গম বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে আছে স্বগর্বে। কাণ্ডে ফুটে আছে অজস্র ফুল। আর সবুজ পাতার আড়ালে বেলের মতো শত শত ফল ঝুলছে।
প্রতিদিন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বিভিন্ন কাজে ভিড় করে হাজারও মানুষ। কাজের ফাঁকে হঠাৎ চোখ পড়ে যায় নাগলিঙ্গম বৃক্ষের দিকে। সেটির গায়ে ঝুলে থাকা ফল ও দৃষ্টিনন্দন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে। কেউ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, কেউবা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে।
নাগলিঙ্গম গাছের সঙ্গে গাজীপুরের ভাওয়াল রাজার স্মৃতি জড়িত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভাওয়াল রাজাদের বাড়িতে ১৫টি হাতি ছিল। তাদের নাম ছিল ফুলমালা, গুন্ডা, বেরেকা ইত্যাদি। সেই হাতিদের ভাওয়াল রাজকুমার রমেন্দ্র নারায়ণ রায় নাগলিঙ্গম ফল খাওয়াতেন। কালের বিবর্তনে ভাওয়াল রাজার বংশধর নেই, হাতিগুলোও নেই; রয়ে গেছে রাজবাড়ি আর নাগলিঙ্গম গাছ।