আমাদের অনেকের ধারণা জীবনে হঠাৎ কোনো বড় পরিবর্তন এসে আমাদের জীবন পাল্টে দেবে। আমরা ভাবি, এক মুহূর্তেই হয়তো আমরা সফল হয়ে যাব। কিন্তু বাস্তবে এমনটা হয় না। জীবনে বড় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য ছোট ছোট পরিবর্তন আনতে হয়। হয়তো আপনার কিছু অভ্যাস নীরবে আপনার জীবনকে কঠিন করে তুলছে, যে কারণে আপনি কেবলই পিছিয়ে পড়ছেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু অভ্যাস সম্পর্কে—
আপনি যখন সত্যিই ‘না’ বলতে চান তখন ‘হ্যাঁ’ বলা
কর্মক্ষেত্রে, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে আমাদের অনেকেরই ‘না’ বলতে কষ্ট হয়। কর্মক্ষেত্রে, বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা পরিবারের মধ্যে—অন্যদের খুশি রাখা বা দ্বন্দ্ব এড়ানোর চিন্তায় আমরা প্রায়ই রাজি হয়ে যাই এমন কিছুতে, যেটি করার মতো সময় বা শক্তি আমাদের থাকে না। কিন্তু প্রতিবার এমনটি করলে ধীরে ধীরে আমরা নিজেদের আসল অগ্রাধিকার থেকে সরে যাই। মনে রাখতে হবে, ‘না’ বলা অভদ্রতা নয়; বরং এটি নিজের প্রতি এবং অন্যদের প্রতি সৎ থাকারই একটি উপায়।
ভুল না করেও ক্ষমা চাওয়া
কাউকে আঘাত করলে ক্ষমা প্রার্থনা করা অবশ্যই জরুরি। তবে অভ্যাসবশত কিংবা শুধু সম্পর্কের শান্তি বজায় রাখার জন্য বারবার ক্ষমা চাইতে থাকলে তা আপনাকে পিছিয়ে দিতে পারে। কেউ যদি সীমা অতিক্রম করে বা আপনাকে হতাশ করে, সেক্ষেত্রে আপনার দিক থেকে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজের প্রতি সম্মান দেখানোও ঠিক অন্যদের সম্মান করার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
নিজেকে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা করা
প্রতিটি সিদ্ধান্তের জন্য পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেওয়া জরুরি নয়। অনেক সময় আমরা নিজেদের কাজ বা সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করি, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যাখ্যার অভ্যাস আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে একটি সহজ ও সম্মানজনক বক্তব্যই যথেষ্ট—মনে রাখতে হবে, সবার অনুমোদন আপনার দরকার নেই।
যারা আপনাকে গুরুত্ব দেয় না, তাদের কাছ থেকে স্বীকৃতি খোঁজা
প্রশংসা পাওয়ার ইচ্ছে স্বাভাবিক, তবে যারা আপনাকে মূল্য দেয় না তাদের অনুমোদনের জন্য ছুটে বেড়ানো কেবল ক্ষতির কারণ হতে পারে। বন্ধু, সহকর্মী কিংবা পরিবারের কেউ—যদি বারবার আপনাকে অযোগ্য মনে করায়, তবে তাদের স্বীকৃতির কোনো প্রয়োজন নেই। বরং যারা আপনাকে সমর্থন করে তাদের দিকে মনোযোগ দিন, আর প্রথমেই নিজের কথার মূল্য দিতে শিখুন।
নিজের কাছে করা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা
আপনি হয়তো সবসময় অন্যদের জন্য এগিয়ে আসেন, কিন্তু নিজের প্রতি দায়বদ্ধতার কী হবে? বিশ্রামের প্রয়োজন উপেক্ষা করা, লক্ষ্য বারবার পিছিয়ে দেওয়া বা বিরতি না নেওয়া আসলে একটি নীরব বার্তা দেয়—আপনার নিজের চাহিদাই অবহেলিত হচ্ছে। তাই যেমনভাবে অন্যদের কাছে করা প্রতিশ্রুতি গুরুত্ব পান, তেমনি নিজের কাছে করা প্রতিশ্রুতিকেও মূল্য দিন। ছোট ছোট ধারাবাহিক প্রচেষ্টাই ধীরে ধীরে নিজের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে।